Tuesday, July 10, 2018

মহাবিশ্ব ও আমরা - ১ঃ পৃথিবী থেকে শুন্যে


ইন্টারমিডিয়েটে আমরা আপেক্ষিকতা নীতি নিয়ে খুব ছোট একটা লেখা পড়েছি পদার্থবিজ্ঞানে! যেটা পুরোপুরি মাথা খারাপ করে দেওয়ার মত! যেখানে সাধারন পদার্থবিজ্ঞানে বস্তুর ভরকে ধ্রুবক ধরা হয় সেখানে বলা হয়েছে বস্তুর ভরও পরিবর্তনশীল। আইনস্টাইন জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে অদ্ভুত এক নীতি আবিষ্কার করে গেছেন। যার মুল বিষয়বস্তু হল মহাবিশ্বের কোন বস্তু পরম নয় সবই আপেক্ষিক।

একটু বুঝিয়ে বলি, মনে করুন আপনি গাড়িতে ভ্রমন করেতেছেন যা ৫০কিমি/সেকেন্ডে সুষম বেগে চলছে। কিন্তু কিভাবে বুঝলেন গাড়িটি চলছে বা এত কিমি বেগে চলছে? স্থির কোন গাড়ি গাছপালার দিকে তাকালেই বুঝা যায় গাড়িটি আসলে চলছে তাইনা? তাছাড়া কোন যন্ত্র ছাড়া বোঝা সম্ভব? সেই স্থির গাড়িটি যদি ৫০ কিমি বেগে বিপরীত দিকে যাত্রা করে তাহলে আপনার গাড়িটির গতিবেগ কত মনে হবে? নিশ্চিৎ ১০০। আবার সেই গাড়িটি যদি ৫০ কিমি বেগে যদি একই দিকে যাত্রা করে তাহলে আপনার গাড়ির গতি কত মনে হবে? নিশ্চিৎ শূন্য! বিশ্বাস না হলে আজই পরীক্ষা করে দেখুন! অথ্যাৎ, ভিবিন্ন প্রসঙ্গ কাঠামোর সাপেক্ষে বস্তুর স্পিড ভিবিন্ন রকম হচ্ছে! অদ্ভুত না?

গাড়ির গতির সাথে সাথেই আমাদের শরীররও সমান গতিপ্রাপ্ত হয়। যে কারনে গাড়ি হঠাৎ ব্রেক কষলে আমরা পেছনের দিকে চলে যাই। এটার প্রমাণ পাওয়া যাবে যদি কোন চলন্ত গাড়ির ছাদে বসে উপরের দিকে কোন বস্তুকে নিক্ষেপ করা হয় তা আবার হাতেই ফিরে আসবে। আরেকটু সহজ করে বলি- ৫০ কিমি/সেকেন্ডে বেগে চলা গাড়ি থেকে যদি কোন বস্তু উপরের দিকে নিক্ষেপ করা হয় তাহলে এক সেকেন্ড পরে তা হাতেই ফিরে আসবে। এটা কিভাবে সম্ভব? কারন এক সেকেন্ড পরে গাড়িতো ৫০ কিমি দূরে চলে যাবে যেখানে বস্তুটি আগের অবস্থায় থাকার কথা কারন বস্তুটির সাথে গাড়ি কিম্বা হাতের কোন স্পর্শ ছিলনা। এটার কারন হল আমাদের হাত গাড়ির সাথে সমান গতিপ্রাপ্ত একই সাথে সেই বস্তুটাও! যে কারনে বস্তুটি হাওয়ায় ঐ ৫০ কিমি অতিক্রম করে আমাদের হাতেই ফিরে আসবে। শরীরের গতিবেগের সাথে মানসিক তারতম্যের কারনেই অনেকে গাড়িতে বমি বমি অনুভব করেন বা বমি করেন। এসবই আপেক্ষিকতার কারন।

কখনো নিজেকে প্রশ্ন করেছেন কেন কোন বস্তুকে দূর থেকে অপেক্ষাকৃত ছোট মনে হয়? ভূমি থেকে সব বস্তুকে এত ছোট দেখায় কেন? মানুষগুলো পিপড়া সাইজের দেখা যায় কেন? এটাও যে একধরনের রিলেটিভিটি তা বললেও ভূল কিছু হবেনা। যাইহোক আমরা সেই বিতর্কে না যাই। যদিও এটার মুল কারন হল বস্তুর সাথে পর্যবেক্ষকের কৌনিক ব্যবধান-
কৌনিক পার্থক্যের কারনে আমরা দূর থেকে কোন জিনিসকে ছোট দেখি
এখন কথা হল ১৩ তলা বিল্ডিং এর ছাদ থেকে মানুষগুলো সহ সবকিছুকে এত এত ক্ষুদ্র মনে হয় সেই সাথে আমরা অনেকগুলো বস্তুকে একসাথে দেখতে পাচ্ছি তাইনা? ঢাকা শহরের কোন ১৩ তলা বিল্ডিং এর ছাদ থেকে মোটামুটি পুরো ঢাকা শহরকে দেখতে পাওয়া যাবে এবং সেই সাথে মানুষগুলো সহ সমস্ত কিছু অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র মনে হবে।
ড্রোন থেকে আমাদের ঢাকা শহর

কখনো কি ভেবে দেখেছেন আমরা যদি ক্রমাগত উপরের দিকে উঠতে থাকি তাহলে আমাদের ঢাকা শহরকে কেমন দেখাবে? কিম্বা উপরে উঠতে গেলে আমাদের কি কি জিনিস ফেস করতে হবে? আমরা জানি আমাদের পৃথিবী বায়ুমন্ডলে আবদ্ধ। উপরে উঠতে গেলে আমাদের এই বায়ুমন্ডলের মধ্য দিয়েই অতিক্রম করতে হবে। দুরত্ব এবং বায়ুমন্ডলের উপাদানের উপর ভিত্তি করে এই বায়ুমন্ডলকে মোটামুটি ৫ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। অথ্যাৎ, নির্দিষ্ট দুরত্বে উপরে উঠতে গেলে আমাদের এই ৫ টি অঞ্চল ফেস করতে হবে।
পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ভিবিন্ন স্তর 

ট্রপোস্ফিয়ারঃ ০ থেকে ১২ কিলোমিটার (০ থেকে ৭ মাইল)
স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারঃ ১২ থেকে ৫০ কিলোমিটার (৭ থেকে ৩১ মাইল)
মেসোস্ফিয়ারঃ ৫০ থেকে ৮০ কিলোমিটার (৩১ থেকে ৫০ মাইল)
থার্মোস্ফিয়ারঃ ৮০ থেকে ৭০০ কিলোমিটার (৫০ থেকে ৪৪০ মাইল)
থার্মোস্ফিয়ারঃ >৭০০
এক্সোস্ফিয়ারঃ <৭০০ কিলোমিটার

এভাবে উপরে উঠতে উঠতে একটা পর্যায়ে নীচের দিকে তাকালে সবুজ গোলাকার পানির ট্যাঙ্কের মত কিছু একটা দেখতে পাবেন। এটাই আসলে আমাদের পৃথিবী। এখানেই আমরা থাকি। এরকম দেখার কারন হল আমরা এতটাই উপরে উঠে গেছি যে পৃথিবী ও চোখের কৌনিক ব্যাবধান এতটাই ক্ষুদ্র হয়েছে যে দেশ, মহাদেশ ছাড়িয়ে আমরা পুরো পৃথিবীকে এক দৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছি। যেমনটা বাসার ছাঁদে উঠলে পুরো ঢাকা শহরকে দেখা যায়।

মোটামুটি ভূপৃষ্ট থেকে ১০০০ কিলোমিটার উপরে উঠে যাওয়ার পর আমরা স্বাভাবিকভাবে আর পৃথিবীতে ফেরত আসবোনা। এখানে আমরা ভাসতে থাকবো। এই অঞ্চলকেই বলা হয় মহাকাশ। এই অঞ্চলের কোন শেষ নেই। এই মহাকাশের বিস্তার কতটূকু তা আজ পর্যন্ত মানুষের দ্বারা বের করা সম্ভব হয়নি।

ছবিটি ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন থেকে তোলা 

আমরা সবাই জানি মহাকাশে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন নামে একটা কৃত্রিম উপগ্রহ আছে। মহাকাশ নিয়ে গবেষনার জন্য ১৯৯৮ সালে এটি চালু করা হয়। পৃথিবীর প্রায় ১৬ টি দেশ নিয়ে গঠিত এই কৃত্রিম উপগ্রহটি পৃথিবী থেকে ৪০৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।  জিরো গ্র্যাভিটিতে বা ভাসমান অবস্থায় মানুষ এখানে কিভাবে থাকে তা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা পাওয়া যাবে এই ভিডিওতে-



পরবর্তীতে মহাকাশ সম্পর্কিত আরো দারুন কিছু বিষয় নিয়ে কথা হবে।

1 comment:

  1. First Casino Games 2021 | Kookoo Official Site
    First Casino Games Review - The official Kookoo 퍼스트 카지노 official site. First casino games are the latest games 메리트카지노 from the Kookoo family and include titles such jeetwin as

    ReplyDelete